বুধবার ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সূরা বাকারা-মায়িদা-নিসা পড়ার শর্তে আসামির সাজা স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   সোমবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট

সূরা বাকারা-মায়িদা-নিসা পড়ার শর্তে আসামির সাজা স্থগিত

পবিত্র আল কোরআনের সুরা বাকারা, মায়িদা এবং নিসা ভালো করে পড়ার শর্তে মাদক মামলায় দণ্ডিত এক আসামির ছয়মাসের সাজা স্থগিত করেছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ৫০টি গাছ লাগাতে এবং মাদরাসায় ভালোমানের কিছু ধর্মীয় বই উপহার দিতে বলা হয়েছে। দণ্ডিত ঐ আসামির নাম মো. ইয়াকুব আজাদ।

রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমামের আদালত মামলার সাজা স্থগিত করে এ আদেশ দেন। সোমবার আদালতের পেশকার ফকির মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আপিল শুনানিতে আইনজীবী জায়েদুর রহমানের মাধ্যমে আসামি প্রবেশন আইন অনুযায়ী দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

শুনানিকালে কাঠগড়ায় থাকা আসামির কাছে বিচারক জানতে চান, ‘আপনার ছেলে-মেয়ে আছে?’ জবাবে আসামি বলেন, ‘এক ছেলে মাদরাসায় হাফেজি পড়ে, আর মেয়ে ছোট।’

তখন বিচারক জিজ্ঞাসা করেন, ‘ঘর পবিত্র করার জন্য ছেলেকে হাফেজি পড়াচ্ছেন, সে আপনার জন্য দোয়া করবে, মরে গেলে জানাজা পড়াবে, আর আপনি ইয়াবা মামলার আসামি।’

এরপর বিচারক বলেন, ‘আপনি কি পড়ালেখা করেছেন?’ আসামি বলেন, ‘আমি মাদরাসা থেকে ফাজিল পাস করেছি।’ এরপর বিচারক বলেন, ‘ছেলে মাদরাসায় হাফেজি পড়ে, আপনি ফাজিল পাস। কেন ইয়াবা মামলার আসামি হলেন?’ আসামি বলেন, ‘স্যার আমাকে ইয়াবা দিয়ে মামলা দিয়েছে।’ এরপর বিচারক বলেন, ‘পবিত্র কোরআনের কোন সুরায় মাদক সম্পর্কে বলা আছে জানেন? সুরা বাকারা, মায়িদা ও নিসা ভালো করে পড়বেন। এর মধ্যে পাবেন মাদক সম্পর্কে বলা কথা।’

এরপর বিচারক বলেন, ‘আপনার সাজা স্থগিত করা হলো। আর প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে থেকে আপনি ৫০টি গাছ লাগাবেন, পবিত্র আল কোরআনের সুরা বাকারা, মায়িদা, নিসা ভালো করে পড়বেন এবং আপনার ছেলে যে মাদরাসায় পড়ে সে মাদরাসায় ভালোমানের কিছু বই উপহার দেবেন।’

আসামির মামলাটির সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ৩ নভেম্বর শাহবাগ থানাধীন হোটেল আপ্যায়নের পূর্বপাশ থেকে মো. ইয়াকুব আজাদকে পাঁচ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয়। ঐদিন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিচালক কাজী হাবিবুর রহমান একটি মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের পর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ইন্সপেক্টর এসএম এলতাস উদ্দিন ঐ বছরের ৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার বিচার চলাকালে আদালত চার্জশিটভুক্ত ১২ জন সাক্ষীর মধ্যে বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

এরপর ২০১৫ সালের ৫ জুলাই তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাশেদ তালুকদার। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাকে এক হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন। জরিমানা অনাদায়ে আরো ১৫ দিনের কারাভোগের আদেশ দেন আদালত। রায়ের পর আসামি পরোয়ানামূলে ২০২০ সালের ২৬ অক্টোবর গ্রেফতার হন এবং একই বছরের ২ নভেম্বর তিনি জামিন পেয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল দায়ের করেন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৮:১৪ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]