নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট
রাজধানীর মিরপুরে দাম্পত্য কলহের জেরে স্ত্রী সাদিয়া আফরিন রিতাকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় স্বামী মো. মানিক মিয়া ব্যাপারীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন প্রেমের পর সাদিয়া আফরিন রিতাকে বিয়ে করেন মানিক মিয়া। এরপর তাদের মধ্যে প্রায়ই সাংসারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া হতো। এরই জেরে রিতাকে নির্যাতন করতেন স্বামী মানিক।
২০১৩ সালের ১২ জানুয়ারি রিতার মাকে ফোন করে মানিক জানান, তাদের মেয়ের খুব জেদ, দুদিন যাবত বাসায় নেই। তার যদি কিছু হয় সে জন্য মানিক দায়ী থাকবে না। এটা বলে মোবাইল কেটে দেন মানিক। এরপর থেকে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। ঐ বছরের ১৪ জানুয়ারি ঢাকায় মেয়ের বাসায় যান রিতার মা। এ সময় তিনি বাসার দরজায় তালা দেখতে পান। প্রতিবেশীরা জানান, তাদের মেয়ে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে বের হয়ে গেছে। এ সময় রিতার বিষয়ে আত্মীয়-স্বজনের কাছে খোঁজ নেয় পরিবার।
১৭ জানুয়ারি পুলিশ রিতার পরিবারকে জানায়, তাদের মেয়ে ঢাকার বাসায় মারা গেছে। মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা আছে। এ খবর শুনে আত্মীয়-স্বজন মর্গে গিয়ে রিতার মরদেহ দেখতে পায়। এ সময় তার মাথা শরীর থেকে আলাদা অবস্থায় ছিল। তার ডান পায়ের উরু ও হাঁটুর নিচে এবং ডান হাতের বগলের উপরে জখম দেখা যায়।
নিহতের বাবা মতিয়ার রহমান জানান, লোকমুখে জানিতে পারি, মেয়ের বাসা থেকে দুর্গন্ধ বের হলে বাড়ির মালিক মিরপুর থানাকে জানায়। পরে পুলিশ ঐ ফ্লাটে প্রবেশ করে দেখতে পায় ভিকটিমের মাথাবিহীন শরীর বাথরুমে পড়ে আছে। আর তার বিচ্ছিন্ন মাথা প্লাস্টিকের নীল রঙয়ের একটি ড্রামে রাখা।
এ ঘটনায় ১৭ জানুয়ারি নিহতের বাবা মতিয়ার রহমান মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। পরবর্তীতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোহাম্মদ সেলিম ৫ এপ্রিল আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর ২০ এপ্রিল একই আদালত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলার বিচার চলাকালে ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
Posted ৯:০৪ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin