নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | প্রিন্ট
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খুঁড়িয়ে চলছে স্বাস্থ্যসেবা। ৫০ শয্যার এই সরকারি হাসপাতালে নেই পর্যাপ্ত জনবল। এরমধ্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ না পাওয়া, দালালের দৌরাত্ম্যসহ নানা কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগীরা। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, যথাযথ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে তাদের চেষ্টার কমতি নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালে অপর্যাপ্ত চিকিৎসক, জনবল সংকট, পুরোনো ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎ লাইন ও বাউন্ডারি উঁচু না থাকার কারণে বিকেলের পর বখাটেদের উৎপাত, ত্রুটিপূর্ণ সেপটিক ট্যাংকের কারণে দুর্গন্ধ ছড়ানোসহ বিভিন্ন সংকটের বেড়াজালে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা।
একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কোনো রোগ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসকের কাছে গেলে প্রয়োজনীয় সব ওষুধ পাওয়া যায় না। এরমধ্যে রয়েছে দালালের দৌরাত্ম্য। দুপুর ২টার পর ল্যাব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালে সেবা নিতে আসলে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর জন্য বাইরের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইমার্জেন্সি বিভাগে রোগী আসার সঙ্গে সঙ্গে সামান্য চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পরই ময়মনসিংহ মেডিকেলে কলেজে রেফার করা হয়।
পৌর এলাকার বাসিন্দা জাকিউল হক বলেন, আমি সপ্তাহের তিনদিন বিকেলে ব্যায়াম করতে হাসপাতালের সামনে দিয়ে হাঁটাহাটি করি। হাসপাতালটিতে কোনো সিকিউরিটি গার্ড নেই। বাউন্ডারি উঁচু না থাকার কারণে বিকেলের পর হাসপাতালটি বখাটেদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে ফারজানা খাতুন বলেন, হাসপাতালে এলে পদে পদে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। দালালরা হাসপাতালের ফটকসহ ভেতরে ঘোরাফেরা করলেও কর্তৃপক্ষ কিছুই বলে না। অনেক রোগীরা তাদের ফাঁদে পা দিয়ে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান। ৪০-৫০% কমিশন দেওয়াসহ নানা প্রলোভনে ডায়াগনস্টিকে নিয়ে গিয়ে সব টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে দালালরা।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, আবাসিক মেডিকেল অফিসার, চক্ষু চিকিৎসক, চর্ম ও যৌন চিকিৎসক, ইএনটি কনসালট্যান্টসহ বেশ কয়েকটি পদ খালি রয়েছে। অন্যদিকে হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য নেই পর্যাপ্ত লোকবল। তিনজন ক্লিনার ও দুজন ওয়ার্ডবয়ের পদ শূন্য রয়েছে। এর বাইরে দাপ্তরিক কাজের জন্যও বিভিন্ন পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। সিকিউরিটি গার্ড না থাকায় হাসপাতাল প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা ঘাটতি রয়েছে। এসবের মধ্যেও যথাযথ চিকিৎসা দিতে চিকিৎসকদের চেষ্টার কমতি নেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লোপা চৌধুরী বলেন, রোগীর অবস্থা গুরুতর হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করা হয়ে থাকে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদ ফাঁকা থাকায় কিছু কাজ ঢিলেঢালাভাবে হওয়াসহ হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাও কঠিন হয়ে পড়ছে। অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও রোগীদের আমরা যথাযথ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
Posted ৪:৫০ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin