শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীর উদ্যোগ ‘সেইলর এজেন্সি’

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট

নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীর উদ্যোগ ‘সেইলর এজেন্সি’

সময়টা ২০২০ এর সেপ্টেম্বর। বাবা-মায়ের বিবাহবার্ষিকী ছিল। তখন ইচ্ছে ছিল বাবা-মাকে নিজের টাকায় কিছু উপহার দেয়ার। টিউশনি করাতাম না। নিজের উপার্জন বলতে কিছুই ছিল না। একদিন এক বড় ভাইয়ের ফেসবুক পোস্টে দেখলাম, তিনি অনলাইনে ১০ ডলার উপার্জন করেছেন। এটা দেখে এই কাজের প্রতি আগ্রহ জন্মাল। কম্পিউটার ও সফটওয়্যার নিয়ে মোটামুটি ভালো ধারণা ছিল আমার আগে থেকেই। তারপর পরিচিত হলাম ফাইবারের সঙ্গে। সেই থেকেই শুরু। অতঃপর কাজ শুরু করলাম ব্রান্ডিং নিয়ে। কথাগুলো বলছিলেন, সেইলর এজেন্সির উদ্যোক্তা ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইসতিয়াক জামান তুর্য।

সেইলর এজেন্সির শুরুর গল্পটা বলতে গিয়ে তুর্য আরো বলেন, ফাইবার, আপওয়ার্কসহ সব প্লাটফর্মে ২০ শতাংশ চার্জ কেটে নেয় মার্কেটিংয়ের জন্য। আর তাই পরিকল্পনা করলাম নিজেরাই কিছু একটা করার। ২০ শতাংশ চার্জ অন্য কোম্পানিকে কেন দেব এই চিন্তা মাথায় এল। আমরা নিজেরাই তো মার্কেটিং করতে পারি। মার্কেটপ্লেসে কাজ করা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন বন্ধু পরিসংখ্যান বিভাগের ফয়সাল এম রহমান, সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের সাদিয়া সাকাইব ও রাকিবুল হাসান এগিয়ে এল। তারপর ওদের নিয়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে খুলে ফেললাম সেইলর এজেন্সি। আমাদের মধ্যে একজন দেখতাম ডিজাইনিংয়ের বিষয়, একজন ওয়েব ডিজাইন আর একজন মার্কেটিং ও প্রমোশন। পরবর্তীতে টিমে আরো কয়েকজনকে যোগ করি। সেইলর এজেন্সির শুরুর গল্পটা ঠিক এরকম।

খুব একটা ক্লায়েন্টের সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না

শুরুতে নিজেদের কিছু নির্ধারিত ক্লায়েন্টদের কাজ করত সেইলর এজেন্সি। প্রথম ৩-৪ মাস ছিল চ্যালেঞ্জিং। ক্লায়েন্ট থেকে খুব একটা সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। অভিজ্ঞতার জন্য নেদারল্যান্ডের ‘টোটাল ডিজাইন’ এজেন্সিতে রিমোট জব এ কাজ শুরু করে সেইলর এজেন্সি। এতে করে ক্লায়েন্ট ম্যানেজমেন্ট, টিমম্যাটদের সঙ্গে ভালো বোঝাপড়া হয়। পরবর্তীতে আমরা ভার্চুয়াল অফিস থেকে ভিজ্যুয়াল অফিস এ স্থানান্তর হই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ছোটখাটো একটি অফিস নিয়েছি। এখনো এখানেই আছি।

তিন থেকে দশজন

শুরুতে তিনজন হলেও সেইলর এজেন্সির সদস্য সংখ্যা এখন ১০ জন। কেউ কাজ করে ব্র্যান্ডিং নিয়ে, কেউ ইউআই/ ইউএক্স আর কেউ ওয়েব ডিজাইন। রয়েছে মার্কেটিং টিম, যারা এজেন্সিকে নতুন ক্লায়েন্টের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। ইসতিয়াক তুর্য বলেন, ‘লেগে ছিলাম, আছি, থাকব’ এই মানসিকতা ফ্রিল্যান্সিংসহ সব কাজে সফলতার মূলমন্ত্র।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে ইসতিয়াক জামান তুর্য বলেন, পড়ালেখার পাশাপাশি কাজ করা একটু কঠিন। তাই ফুলটাইম কাজ করা হয় না। কিন্তু ইচ্ছে আছে গ্রাজুয়েশনের পরে ফুলটাইম কাজ করার। বড় অফিস, বড় সেটআপ ও অনেক টিম মেম্বার নিয়ে বাংলাদেশের সেরা ব্র‍্যান্ডিং এজেন্সি এর মধ্যে একটা হতে চাই আমরা।

নতুনদের জন্য পরামর্শ

এই পথে আসতে চাওয়া নতুনদের উদ্দেশ্যে ইসতিয়াক জামান তুর্য বলেন, নতুন এখন সবাই সাধারণত গ্রাফিক্স, সিএমএস ডেভেলপমেন্ট আর কিছু কমন সেক্টর নিয়ে কাজ করতে চায়। সাধারণত কিছু কোর্স বিক্রেতা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য তাদের এসব কাজে আনেন এবং অপরিপক্ব অবস্থাতেই মার্কেটপ্লেসে নিয়ে আসেন। এতে করে দক্ষ মানুষের সংখ্যা কমছে এবং অনেক সেক্টরে দক্ষ মানুষের অভাব হচ্ছে। তাই কোর্স বিক্রেতার পেছনে না ছুটে নিজে নিজে শেখার উপরই জোর দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১০:১৩ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]