শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্যবসাটাকে আরো সেক্টরভিত্তিক করব : শামীমা সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ০৪ জানুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট

ব্যবসাটাকে আরো সেক্টরভিত্তিক করব : শামীমা সরকার

শামীমা সরকার একজন সফল ব্যবসায়ী। নানা চড়াই-উৎরাই পার হয়ে ব্যবসার পরিধি বাড়িয়েছেন তিনি। প্লাস্টিকের পণ্য হোল সেল করেন। তিনি মনে করেন এই ব্যাবসায়ে নারীর অংশগ্রহণ এখন পর্যন্ত কম। সফল এই ব্যবসায়ীর মুখোমুখি হয়েছিলেন ডেইলি বাংলাদেশের সহ-সম্পাদক সাদিকা আক্তার। আলোচনার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো ডেইলি বাংলাদেশের পাঠকদের জন্য।

ডেইলি বাংলাদেশ: উদ্যোক্তা হওয়ার পরিকল্পনা কখন গ্রহণ করলেন?

শামীমা সরকার: স্টুডেন্ট অবস্থা থেকে ভাবতাম কারো নির্দেশনায় কাজ করবো না। আমি তখন থেকেই ব্যবসা করবো সেই ইচ্ছা ছিল। কিছু কাজের মাধ্যমে একটি প্রেক্ষাপট তৈরি হয়ে গেছে। প্রথমে আমি আইটি সেক্টর নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। আমার কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার ছিল। ক্লাস নিয়ে ফাঁকে ফাঁকে বসে থাকতাম। সেখান থেকে মনে হলো এভাবে বসে না থেকে পাশাপাশি যদি আরেকটা কিছু করা যায়। সেই থেকেই শুরু। বর্তমানে অন্ততপক্ষে ৩০ জন সেলার আছে, যারা আমার কাছ থেকে প্রোডাক্ট নিয়ে অনলাইন প্লাটফর্মে (দারাজ)সহ আরো অনলাইন প্লাট ফর্মের অনেক সেলার করে। আমি বেশ কয়েকটি প্লাস্টিক প্রোডাক্ট নিয়ে বিজনেস করি। শুধু রাজশাহী নয়, বিভাগের বাহিরে সৈয়দ পুরে সব চেয়ে বেশি পন্য যায় আমার। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্লাস্টিক প্রোডাক্ট পৌঁছে দিচ্ছি। দোকানে মাদার প্রোডাক্ট হছে প্লাস্টিকের ফুলের টব। বলতে পারেন প্রোডাক্ট সিলেকশন করার দক্ষতা আমার ব্যবসাকে অনেক দূর এগিয়ে দিয়েছে।

ডেইলি বাংলাদেশ: সফল ব্যবসায়ী হওয়ার পেছনে কারা আপনাকে সহযোগিতা করেছেন?

শামীমা সরকার: আমি আমার পরিবারের থেকেও যার কাছ থেকে বেশি সহযোগিতা পেয়েছি সে আমার খুব ভালো একজন বন্ধু ‘মরিয়ম বানু আইরিন’। সে এবি ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার পদে চাকরি করে। আপাতত সে রাজশাহী ব্র্যাঞ্চে কর্মরত। সে সবসময় আমাকে বলতো যে, ‘তুমি পারবে। তুমি করতে পারবে।’ এই যে একটা সাহস দেওয়া আসলে আমরা যখন একটা কিছু করি ভালোমন্দ রেজাল্টটা পেতে সময় লেগে যায়। আমি কিছু করিনি। কিন্তু আমাকে বলেছে যে, ‘হ্যাঁ, তুমি পারবা। করো।’ এই সাহস একটা বিশাল ব্যাপার ছিল আমার জন্য। আমরা অবশ্য সেই ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে বন্ধু। এখন পর্যন্ত খুব ভালো সম্পর্ক আছে আমাদের। ও আমার জন্য অনুপ্রেরণা। তাছাড়া পরিবার থেকে সাপোর্ট পেয়েছি। তবে আমার পরিবারের সবাই চাকুরীজীবী, ব্যবসা অতটা সাপোর্ট করে না। শুধুমাত্র বড় ভাইয়ের কথা হচ্ছে যে, ‘তুই বিজনেস কর’।

ডেইলি বাংলাদেশ: ব্যবসায়ী হওয়ার পর আপনার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা কেমন?

শামীমা সরকার: প্রথমত আমি একজন নারী। মেয়েদের ক্ষেত্রে বাইরে চাকরি করাটা কঠিন। পরিবেশটা কিন্তু পুরো বিরূপ। আগে আমাকে জায়গা তৈরি করতে হয়েছে। আমি যেহেতু প্লাস্টিক প্রোডাক্ট বিক্রি করি সুতরাং আমার পুরুষদের সঙ্গে একটা প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে হচ্ছে। ব্যবসা জগতে নারীর সংখ্যা কম। যেকোনো কনফারেন্সে যেমন কিছুদিন আগে আরএফএল এর ইডি সাহেব এসেছিল রাজশাহীতে। ওখানে যতজন কনফারেন্স করেছিলেন তার মধ্যে সবাই পুরুষ, শুধু আমি একাই নারী ছিলাম। আর আগে- আমি ড্রাইভিংয়ের পরীক্ষা দিতে গিয়েছি, সেখানে আমি একা নারী। এরকম কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বাধা তো অনেক। তারপরে আবার আমাকে প্রথম প্রশ্ন করা হয়,‘আপনি বিজনেসে কেন আসলেন, আপনার বাবা করেছে, ভাই করেছে বা পরিবারের কেউ আসছে কিনা ‘- এটা কিন্তু তা নয়। আলহামদুলিল্লাহ্‌। এই প্রশ্ন ও নিজের অবস্থান দুটিই এনজয় করি।

ডেইলি বাংলাদেশ: আপনার ব্যবসার পরিধি সম্পর্কে কিছু বলুন।

শামীমা সরকার: আমি প্রথমে ১২টি টব দিয়ে শুরু করেছিলাম। আমার ঘরে এখন একেকটি টবের আইটেম থাকে ১০০টি করে ছোটগুলো, আর বড় টব থাকে এক হাজার, পাঁচশ, সাতশ এরকম করে। আমার ২টি বড় বড় গোডাউন রয়েছে। আমি একটা শপ থেকে শুরু করেছিলাম। এখন আমার তিনটি বড় বড় শপ। আমি মাস্টার্স এবং এমবিএ দুটিই সম্পন্ন করেছি। এক লাখ টাকা লোন নিয়ে ব্যবসা শুরু, এখন আলহামদুলিল্লাহ্‌ আপনাদের দোয়ায় আমার সবসময়ই স্টক থাকে ২০ লাখ টাকার পণ্য। মাসে এভারেজ আট লাখ টাকার পণ্য সেল করি এখন।

ডেইলি বাংলাদেশ: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

শামীমা সরকার: ব্যবসাটাকে আরো বড় করব, আরো সেক্টরভিত্তিক করব, আরো ডেভেলপ করব।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১০:০৩ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৪ জানুয়ারি ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]