নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট
বারবার বিরোধে জড়াচ্ছেন বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। রওশন চান জাপা থেকে বহিষ্কার হওয়া মসিউর রহমান রাঙ্গা, জিয়াউক হক মৃধাসহ কয়েক নেতাকে দলে ফেরাতে। কিন্তু ভাবির চাওয়ার সঙ্গে একমত হ তে পারছেন না দেবর জি এম কাদের। এ নিয়েই ফের বিরোধে জড়িয়েছেন দেবর-ভাবি।
জানা গেছে, আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন অনিশ্চিত বলে জি এম কাদেরের সঙ্গে ঐক্যে নারাজ রওশনপন্থী কয়েকজন নেতাও। এদিকে রওশন বলয়ের সবাইকে দলে ‘পুনর্বাসনে’ রাজি নন জি এম কাদেরপন্থীরাও। এসব কারণে জাপায় দেবর-ভাবির বিরোধ মিটছেই না।
টানা বিরোধে গত বছর ভাঙনের মুখে পড়ে জাপা। এর মধ্যেই গত ৯ জানুয়ারি রওশন এরশাদ ও জি এম কাদের যুক্ত বিবৃতিতে ঐক্যের ডাক দেন। এমনকি জাপার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জি এম কাদেরের সঙ্গে এক মঞ্চেই ছিলেন রওশন এরশাদ এবং তার ছেলে রংপুর-৩ আসনের এমপি রাহগির আল মাহি (সাদ এরশাদ)। তাদের এক মঞ্চে দেখে রাজনীতির মাঠে ‘বিরোধ মিটেছে’ গুঞ্জন শুরু হয়।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জাপার এমপি ও প্রেসিডিয়াম সদস্যদের নিয়ে যৌথ সভা করেন জি এম কাদের। এতে যোগ দেন জাপার যুগ্ম মহাসচিব সাদ এরশাদও। সেই সভায় ফের বিরোধের সূত্রপাত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২০ মার্চ জাপার প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্মদিন পালন ও গত সোমবার নিজ অনুসারীদের নিয়ে ইফতার করেন রওশন এরশাদ। তবে কোনো অনুষ্ঠানেই দাওয়াত পাননি জি এম কাদের ও তার অনুসারীরা।
রওশনপন্থিদের ভাষ্য, জি এম কাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে লাগাতার সমালোচনা করে যাচ্ছেন। যেসব শর্তে দেবর-ভাবির মধ্যে ‘মধ্যস্থতা ও সমঝোতা’ হয়েছিল তা রক্ষা করেননি জি এম কাদের। রওশনপন্থী জাপার ৮ সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১০ জন সাবেক মন্ত্রী-এমপিকে দলে নিচ্ছেন না জি এম কাদের।
এ বিষয়ে জি এম কাদের বলেছেন, দল থেকে বাদ পড়া এবং বহিষ্কৃত কিছু নেতা রওশন এরশাদের নাম ব্যবহার করে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছেন। তাদের কোনোভাবেই দলে ফেরানো হবে না। এতে তারা যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। তাদের নিয়ে জাতীয় পার্টির কোনো আগ্রহ নেই।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, রওশন এরশাদ ও জি এম কাদেরের মধ্যকার বিরোধে মূলত জাতীয় পার্টিই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দলটির দুই নেতা ব্যক্তিগত লাভ-লোকসানের হিসাব নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও ক্ষতি হচ্ছে অন্য ত্যাগী নেতাকর্মীদের। দেবর-ভাবির কারণে দিনদিন জাপা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন যোগ্য নেতাকর্মীরা। এ সমস্যার সমাধান না করলে আগামীতে নির্বাচন কিংবা দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার মতো নেতাকর্মী থাকবে না জাতীয় পার্টিতে। এ কারণে সমাধানের পথ খুঁজতে রওশন এরশাদ এবং জি এম কাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে।
Posted ৭:২৪ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin