শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভিনদেশিদের সেহরি-ইফতার কিনতে হয় না যে দেশে

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট

ভিনদেশিদের সেহরি-ইফতার কিনতে হয় না যে দেশে

মুসলিম উম্মাহর জন্য রোজা রাখার পর একটি বিশেষ আনন্দের মুহূর্ত হচ্ছে ইফতার। তবে ইফতার গ্রহণের আগে খেতে হয় বরকতপূর্ণ সেহরি। রোজার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত হচ্ছে সেহরি খাওয়া।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেও সেহরি খেতেন, উম্মতকেও সেহরির ব্যাপারে গুরুত্ব সহকারে আদেশ করেছেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তোমরা সেহরি খাও। কেননা সেহরিতে বরকত আছে।’ (সহিহ বুখারি: ১৯২৩)

সেহরির বরকত ও কল্যাণ নানাবিধ উপায়ে অর্জিত হয়। যেমন- এর দ্বারা ইবাদতের শক্তি অর্জিত হয়, দেহ-মনে উদ্যমতা আসে। ক্ষুধার তাড়নায় সৃষ্ট প্রবৃত্তির বাসনা হ্রাস পায়। বিশেষত সেহরির সময়ে তাহাজ্জুদ ইস্তিগফার ও দোয়া-মোনাজাতের সুযোগ লাভ হয়।

আবার সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সারাদিন সিয়াম পালন শেষে সূর্যাস্তের পর প্রথম পানাহার করাকে ইফতার বলে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা রাত শুরু হওয়া পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করো। (সূরা: বাকারা, আয়াত: ১৮৭)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, রোজাদারের জন্য দুটি খুশি; একটি ইফতারের সময়, অপরটি আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়। (সহিহ বুখারি : ৭৪৯২)

হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন, আমার বান্দাদের মধ্যে তারা আমার বেশি প্রিয়, যারা দ্রুত ইফতার করে। (সুনানে তিরমিযি : ৭০০)

হজরত সাহাল বিন সাআদ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যত দিন লোকেরা ওয়াক্ত হওয়ামাত্র ইফতার করবে, তত দিন তারা কল্যাণের ওপর থাকবে। (সহিহ বুখারি : ১৯৫৭)

ইসলামের পবিত্রতম শহর মক্কা ও মদিনায় বাহারি সেহরি ও ইফতার বিতরণে পালিত হয় রমজানের রোজা। রোজায় দেশটিতে রমজানের আমেজ থাকে ভিন্নরকম। হাসি-খুশি, উৎসবসমুখর ও অনেকটা আনন্দঘেরা পরিবেশে কাটে তাদের রমজান। রাতে অনুষ্ঠিত হয় দীর্ঘ সময়ের নামাজ তারাবিহ।

সৌদিতে দুই মাস আগ থেকেই চলে রমজানের প্রস্তুতি

মহিমান্বিত রমজান মাস পালনে সৌদি আরবে দুমাস আগ থেকে চলে প্রস্তুতি। ইবাদতের জন্য সারাদিনের কাজ-কর্মঘণ্টা গুটিয়ে আনে সৌদিরা। সব মিলে ৫ থেকে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা কাজের সময় নির্ধারিত করা হয়।

আগাম প্রস্তুতি হিসেবে চলে কুশল বিনিময়

রমজানের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে তারা একে অপরের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ‘শাহরু আলাইকা মোবারাকা’ বলে কুশল বিনিময় করে।

রমজানে তাঁবু ও মসজিদে ইফতারের আয়োজন

রমজান শুরু হওয়ার সপ্তাহ-দশ দিন আগ থেকেই সৌদিতে রাস্তার পাশে কিংবা বাজার-মার্কেটে শোভা পায় সারি সারি তাঁবু। যার অনেকগুলো আবার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। রোজাদারদের ইফতার করানোর জন্যই তৈরি করা হয় এসব। তাঁবুগুলোতে যথারীতি ভালো মানের ইফতারির ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়া সব মসজিদে থাকে ইফতারের বিশেষ ব্যবস্থা। ইফতারের সময় তারা মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া করেন।

বাহারি ইফতার আয়োজনে যা থাকে

তাঁবুর ইফতার আয়োজনে সাধারণত প্যাকেটজাত উন্নত মানের খেজুর, গাওয়া, বোতলজাত পানি, জুস, মাঠা, বিভিন্ন ধরনের ফল, কফি, চিকেন বিরিয়ানি বক্স এবং এলাকাভিত্তিক ঘরোয়া খাবার ইত্যাদি থাকে।

মাসজুড়ে চলে বাহারি ইফতার-সেহরি বিতরণ

পুরো রমজান মাসে ভিনদেশি শ্রমিকদের সেহরি বা ইফতার কখনও কিনতে হয় না সৌদিতে। এসব কাজ তাঁবুতে পুরোপুরি নিজস্ব উদ্যোগেই হয়ে থাকে। মসজিদে বিতরণ করা হয় ইফতারে বিশাল সমাহার।

রমজানে দ্রব্যমূল্য হাতের নাগালে

সৌদিতে রমজান উপলক্ষে বিভিন্ন কোম্পানির জিনিসে থাকে বিশেষ ছাড়। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য থাকে হাতের নাগালে। সরকারিভাবে এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

ক্রয়-অক্ষমদের জন্য রমজান মাসে থাকে গিফট বক্স

দেশটিতে রমজান উপলক্ষে ক্রয়-অক্ষম মানুষদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় গিফট বক্স। যাতে থাকে তেল, চিনি, দুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য দ্রব্য।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৭:২৭ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]