নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ০১ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠার লক্ষ্যে আজ কুয়েতের বিপক্ষে নেমেছিল বাংলাদেশ। দীর্ঘ ৩৭ বছর পর দেশটির বিপক্ষে খেলতে নেমে দারুণ লড়াই করছে লাল-সবুজরা। তবে শেষ হাসি হাসা হয়নি। খেলা দিয়ে হৃদয় জিতে নিলেও বিদায় নিতে হয়েছে অশ্রুজলে।
ভারতের ব্যাঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে ১-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা গোলশূন্য ড্রয়ে শেষ হয়। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের শেষ সময়ে (১০৭ মিনিট) একমাত্র গোলের দেখা পায় কুয়েত।
ম্যাচে ৭১ শতাংশ সময় বলের দখল রেখে বাংলাদেশের গোলমুখে ১৮টি শট নেয় কুয়েত, যার এগারোটি ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে বাংলাদেশ গোলের জন্য ১২বার শট নেয়, যেখানে লক্ষ্যে রাখতে পারে ছয়টি।
এ ম্যাচে এক পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ। গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে দলে ফিরেছেন ডিফেন্ডার তারিক কাজী। ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচে ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি তিনি।
ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই গোলের দেখা পেতে পারতো বাংলাদেশ। তবে রাকিবের ক্রস থেকে গোলকিপারকে ডি বক্সে একা পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি শেখ মোরসালিন। এরকম সহজ সুযোগ মিসের ফলে প্রথমেই এগিয়ে যাওয়া হয়নি বাংলাদেশের।
ম্যাচের ৬ মিনিটে গোল হজম করতে পারতো বাংলাদেশ। তবে কর্নার থেকে বলটি গোলপোস্টের দিকে এগোলেও গোললাইন থেকে তা ক্লিয়ার করে লাল সবুজদের বাঁচিয়ে দেন ইসা ফয়সাল। আরো কয়েকবার বল ক্লিয়ার করে দলকে বিপদমুক্ত করেন তিনি।
২৮ মিনিটের মাথায় কুয়েতের গোলপোস্ট লক্ষ্য করে দুর্বল একটি শট নেন রাকিব। অবশ্য এটি কুয়েতের গোলরক্ষককে তেমন পরীক্ষার মুখে ফেলতে পারেনি। মিনিট দুয়েক পর দুর্দান্ত একটি সেভ দেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো।
এর পরই আচমকা আক্রমণে আরেকটি গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। তবে মোরসালিনের ক্রস রাকিবকে কাজে লাগাতে দেননি কুয়েতের ডিফেন্ডাররা। ৪০ মিনিটে আরেকটি দারুণ সেভ করে দলকে রক্ষা করেন জিকো।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে বেশ আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে কুয়েত। প্রথম পাঁচ মিনিটে টানা কয়েকটি সেট পিসও পায় তারা। তবে বাংলাদেশের রক্ষণভাগ দারুণভাবে সব আক্রমণ রুখে দেয়।
খেলার ধারার বিপরীতে ৫৫ মিনিটে দূর থেকে দারুণ একটি শট নেন রাকিব। যা অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৬০ মিনিটের মাথায় রাকিবের শট কুয়েতের গোলপোস্টে না লাগলে আনন্দে মাততে পারতো লাল সবুজরা। তবে শেষ পর্যন্ত যোগ হয়েছে আরেকটি হতাশা।
৬২ থেকে ৬৯ মিনিতের মাঝে কুয়েতও বেশ কয়েকবার হতাশায় ভাসে। প্রতিবারই দুর্দান্ত নৈপুণ্য প্রদর্শন করে বাংলাদেশকে বাঁচান জিকো। ৭৪ মিনিটে আরো একবার এক হাতে দলকে বাঁচান তিনি।
এরপর আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চললেও কোনো দলই নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোলের মুখ দেখতে পারেনি। যেখানে একটি করে সহজ সুযোগ মিস করে বাংলাদেশ ও কুয়েত। ফলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
অতিরিক্ত সময়ের শুরু থেকেই আক্রমণের বন্যা বইয়ে দেয় কুয়েত। বরাবরের মতো এবারও ঢাল হয়ে দাঁড়ান জিকো। ৯৮ মিনিটে ওয়ান অন ওয়ানে জিকোর সেভ ফুটবলপ্রেমীদের চোখে লেগে থাকবে বহুদিন।
বাংলাদেশের প্রতিরোধ ভাঙে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের একদম শেষ সময়ে। যেখানে অতিরিক্ত সময়েরও অতিরিক্ত সময়ে গোল করেন আব্দুল্লাহ আল বালৌশি।
অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফিরতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে বাংলাদেশ। তবে সাফল্যের দেখা মেলেনি। রেফারি শেষ বাঁশি বাজানোর সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চিত হয় লাল সবুজদের বিদায়।
Posted ১২:৪৭ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০১ জুলাই ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin