শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শীত-গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণ নিয়ে সূরা কুরাইশে যা বর্ণিত হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট

শীত-গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণ নিয়ে সূরা কুরাইশে যা বর্ণিত হয়েছে

সূরা কুরাইশ পবিত্র কোরআনের ১০৬ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৪। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ। কুরাইশ একটি গোত্রের নাম। নদীর ইবন কিনানার সন্তানদেরকে কুরাইশ বলা হয়। যারাই নদীর ইবনে কিনানাহ-এর বংশধর তারাই কুরাইশ নামে অভিহিত।

হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা ইসমাঈলের বংশধর থেকে কিনানাহকে, কিনানাহর বংশধর থেকে কুরাইশকে, কুরাইশ থেকে বনী হাশেমকে, বনী হাশেম থেকে আমাকে পছন্দ করেছেন। (মুসলিম, হাদিস, ২২৭৬)

এই সূরায় কুরাইশদের একটি বিশেষ অবস্থার প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে তাদেরকে আল্লাহর ইবাদতের প্রতি গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। আর তাহলো, মক্কা শহর যেখানে অবস্থিত সেখানে কোন চাষাবাদ হয় না, বাগবাগিচাও নেই; যা থেকে ফলমূল পাওয়া যেতে পারে। তাই বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে সফর ও বিদেশ থেকে প্রয়োজনীয় জীবনোপকরণ সংগ্ৰহ করার ওপরই মক্কাবাসীর জীবিকা নির্ভরশীল ছিল।

মূলত, তৎকালীন সময়ে মক্কাবাসী খুব দারিদ্র্য ও কষ্টে দিনাতিপাত করত। অবশেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রপিতামহ হাশেম কুরাইশকে ভিনদেশে গিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে উদ্ধৃদ্ধ করেন। তখনকার সময়ে সিরিয়া ছিল ঠাণ্ডা দেশ, তাই গ্রীষ্মকালে তারা সিরিয়া সফর করত। অপরদিকে ইয়ামেন গরম দেশ ছিল বিধায় তারা শীতকালে সেখানে বাণিজ্যিক সফর করত এবং মুনাফা অর্জন করত। (জালালাইন, কুরতুবী)

বায়তুল্লাহর খাদেম হওয়ার কারণে পুরো আরবে তারা ছিল সম্মান ও শ্রদ্ধার পাত্র। ফলে পথের বিপদাপদ থেকে তারা সম্পূর্ণ নিরাপদ ছিল। (ফাতহুল কাদীর) আলোচ্য সূরাতে আল্লাহ তায়ালা মক্কাবাসীদের প্রতি তার এসব অনুগ্রহ ও নেয়ামত সম্পর্কে আলোচনা করে তাদেরকে ঈমান ও তাওহীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

এই সূরার সারকথা হলো, কুরাইশরা যেহেতু শীতকালে ইয়ামেনের ও গ্ৰীষ্মকালে সিরিয়ার সফরে অভ্যস্ত ছিল এবং এ দুটি সফরের ওপরই তাদের জীবিকা নির্ভরশীল ছিল এবং তারা ঐশ্বর্যশালীরূপে পরিচিত ছিল, তাই আল্লাহ তায়ালা তাদের শত্রু হস্তীবাহিনীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে মানুষের অন্তরে সকলেই তাদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে। সুতরাং তাদের উচিত এ ঘর ‘কাবার’ রবের ইবাদত করা। (ইবন কাসির)

সে যুগে আরবের অবস্থা এমন ছিল যে, সারা দেশে এমন কোন জনপদ ছিল না যেখানে লোকেরা রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারতো। কারণ সবসময় তারা আশংকা করতো, এই বুঝি কোন লুটেরা দল রাতের অন্ধকারে হঠাৎ তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো এবং তাদের সবকিছু লুট করে নিয়ে গেলো। কিন্তু কুরাইশরা মক্কায় সম্পূর্ণ নিরাপদ ছিল। তাদের নিজেদের ওপর কোন শত্রুর আক্রমণের ভয় ছিল না। তাদের ছোট বড় সব রকমের কাফেলা দেশের প্রত্যেক এলাকায় যাওয়া আসা করতো।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৮:১৭ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]