নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ০২ মার্চ ২০২৪ | প্রিন্ট
পরিবারের ঋণ থাকায় বাবার আয়ে সংসার চলত টানাপোড়নের মধ্য দিয়ে। তাই নিজের পড়ালেখা বিসর্জন দিয়ে পরিবারের হাল ধরতে বেইলি রোডের একটি রেস্টুরেন্টে রেস্টুরেন্টে সহকারী সেফের কাজ নিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জের শান্ত হোসেন।
ছোট দুই ভাই-বোনের পড়াশোনার খরচ জোগাতে নিজের স্বপ্ন বিকিয়ে দিয়ে এই কাজে যোগ দিয়েছিলেন শান্ত। তবে সেই স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি, ফিরেছেন লাশ হয়ে। কর্মক্ষম সন্তান হারিয়ে শান্তর মা এখন পাগলপ্রায়। পরিবারটিতে বইছে শোকের মাতম।
বৃহস্পতিবার রাতে বেইলি রোডের বহুতল ভবনের আগুনে পুড়ে ও প্রচণ্ড ধোয়ার কারণে নিহতদের মধ্যে শান্তর বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। শুক্রবার জুম্মার পর তার জানাজা শেষে তাকে ভুইগর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের ভুইগর পশ্চিম পাড়ার সৌদি প্রবাসী আমজাদ হোসেনের বড় ছেলে শান্ত। তাই পরিবারের হাল ধরতে বেইলি রোডের ওয়াফিয়া জুস বার অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে কাজ নিয়েছিলেন তিনি। মূলত, কলেজ পড়ুয়া ছোট ভাই আর স্কুল পড়ুয়া ছোট বোনকে উচ্চশিক্ষিত করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বেইলি রোডের সেই আগুনে শুধু পোড়েনি শান্ত, পুড়েছে পুরো পরিবারের স্বপ্ন। পরিবার-প্রতিবেশীদের নীরব দৃষ্টি বলে দিচ্ছিল-কেউ এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না। সন্তান হারানো মায়ের গগণবিদারী আহাজারি আর শোকের মাতমে স্তব্ধ হয়ে গেছে পুরো এলাকা।
সন্তান হারিয়ে আহাজারিতে ভেঙে পড়া শান্তর মা লিপি আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলের সঙ্গে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় কথা হয়েছে। সব সময় অডিও কল দিলেও বৃহস্পতিবার ভিডিও কল দিয়েছিল। ছোট ভাই-বোনের পড়াশুনার খবর নিল। আমার সাথে কথা বলল। ভাবিনাই আমার মানিকরে এইবারের মতোই শেষবার দেখব।’
নিহত শান্তর বন্ধু নাজমুল হাসান বলেন, ‘আমার বন্ধু খুবই পরিশ্রমী মানুষ ছিল। সে তার স্বপ্নকে মাটি দিয়ে ছোট দুই ভাই-বোনের জন্য চাকরি করত। শুধু তাই নয়, এক কথায় বলতে গেলে এই বয়সে পুরো পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছিল। তার এই চলে যাওয়া আমরা মেনে নিতে পারছি না।
Posted ২:০৬ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০২ মার্চ ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin