নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | প্রিন্ট
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার হারুকান্দি ইউপির পদ্মানদীর বড় কুলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল মাছ ধরা উৎসব। পদ্মা নদীর চরের মাঝে এই কোলে মাছ ধরার উৎসব চলে আসছে ১৮ বছর ধরে। শতাধিক মাছ শিকারীর কোলাহলে মাছ ধরার উৎসব হয়ে উঠে আরো আকর্ষণীয়।
বুধবার সকাল থেকেই দূর-দূরান্ত থেকে মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে হাজারো মানুষ জড়ো হয় মাছ ধরার উৎসবে। কেউ পলো, কেউ ধর্মজাল আবার কেউবা সুতিজাল নিয়ে নেমে পড়ে মাছ ধরার উৎসবে। এর মধ্যে পলো দিয়ে মাছ শিকারীর সংখ্যাই বেশি।
মাছ ধরার নেশায় সকাল থেকেই নদী পাড়ে ভিড় জমায় উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে থেকে আসা শতাধিক শৌখিন মাছ শিকারী। কেউ মাছ নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন আবার কেউ কয়েক ঘণ্টা চেষ্টা করেও কোনো মাছ পাননি। তবে না পেলেও আনন্দের কোনো কমতি ছিল না তাদের মাঝে।
উপজেলার হারুকান্দি ইউপির কাজিরটেক গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাক আহমেদ জানান, দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে আমাদের এই গ্রামের নদীর বড় কুলে প্রতিবছর মাছ ধরার উৎসবের আয়োজন করা হয়। শখের বসে মাছ ধরার উৎসবে আসি আমরা। কেউ মাছ পায় কেউ পায় না। তারপরেও এখানে অংশ নেয়া আনন্দের বিষয়।
উপজেলার ধূলশুড়া ইউপির ধূলশুড়া গ্রামের নারায়ণ সাহা বলেন, ‘প্রত্যেক বছর পলো বাইচে অনেক লোক পদ্মানদীর এইহানে আহে। ছোট বেলায় বাপের লগে অ্যাইসা কত্ত মাছ ধরছি। এহনতো আগের মতন মাছ পাওন যায় না। তবে, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য টিকা আছে এটা তো অনেক বেশি।’
উপজেলার লেছড়াগঞ্জ গ্রামের রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা ছয়জন বন্ধু প্রথমবারের মতো মাছ ধরতে আসছি। পলো দিয়ে আমার বন্ধু শফিক ১৫ মিনিটের মাথায় বড় সাইজের শোল মাছ পায়। দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আমরা সবাই মিলে পাঁচটা বড় মাছ পেয়েছি। বাড়ি গিয়ে নিজেরাই রান্না করে খাবো। মাছ পলোতে আটকানোর পর এতো আনন্দ লাগে তা বলে বোঝাতে পারব না।
পলোবাইচ উৎসবের আয়োজক মো. আওলাদ হোসেন জানান, প্রতিবছর বৈশাখ মাসে মাছ ধরার আয়োজন করা হয়। দিনক্ষণ ঠিক করে সবাইকে মোবাইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়। ঈদে ঘরে ফেরা অনেকেই মাছ ধরার এই উৎসবে যোগ দেয়। ঈদের পরে মাছ ধরার উৎসবে অংশ নেয়া ঈদের আনন্দের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। মাছ পেলেও খুশি আর না পেলেও খুশি। আমাদের এমন আয়োজন ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে ।
Posted ২:৩৭ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin