মঙ্গলবার ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাবি ছাত্রকে হল ছাড়ার হুমকি, অনাবাসিক ছাত্রকে সিটে তুলল ছাত্রলীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট

রাবি ছাত্রকে হল ছাড়ার হুমকি, অনাবাসিক ছাত্রকে সিটে তুলল ছাত্রলীগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলের এক আবাসিক ছাত্রকে সাত দিনের মধ্যে হলের সিট ছাড়ার হুমকি ও অনাবাসিক এক শিক্ষার্থীকে ওই কক্ষে তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগের একাংশের বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার (২০ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টায় ওই হলের ৪৩১ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। অভিযুক্তরা হলেন মাদার বখশ হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত রায় ও হল ছাত্রলীগের কর্মী আরিফ।

ভুক্তভোগী, প্রত্যক্ষদর্শী ও হলের আবাসিক সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাদার বখশ হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত রায়ের অনুসারী আরিফের নেতৃত্বে পাঁচ থেকে ছয় ছাত্রলীগ কর্মী ৪৩১ নম্বর কক্ষে আসেন। মেহেদী হাসান কবে হল ছাড়বেন তা নিয়ে তারা জানতে চান এবং নাজমুল নামের এক অনাবাসিক শিক্ষার্থীর বিছানাপত্র ওই কক্ষে রেখে যান। ছাত্রলীগ কর্মীরা মেহেদীকে জানান, নাজমুল ওই কক্ষে থাকবেন। একই সঙ্গে সাত দিনের মধ্যে তাকে হল ছাড়তে হুমকি দেন তারা। এ সময় তাদের হাতে একটি তালিকা দেখা গেছে। কোন কক্ষে কত সিট খালি আছে, সেই তালিকা ধরে তারা বিভিন্ন কক্ষে খোঁজখবর নিচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন হলের একাধিক আবাসিক শিক্ষার্থী। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে নাজমুল হাসান ওই কক্ষে আসেন এবং রাতে অবস্থান করেন।

নাজমুল হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। নাজমুল বলেন, ‘আমি হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত ভাইয়ের রাজনীতি করি। তিনি আমাকে হলে তুলেছেন। আমার কোনো আবাসিকতা নেই।’

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, ‘২০ দিন আগে জয়ন্ত (মাদার বখশ হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক) কক্ষে বস্তা রেখে গেছে। আমি বলছি, আমার এখনো পরীক্ষার ফলাফল হয়নি, হলেই চলে যাব। জয়ন্ত তখন কিছু বলেনি। এর কিছুদিন পর তিন থেকে চারজন এসে সাত দিনের মধ্যে হল ছাড়ার হুমকি দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ পর্যায়ে এসে এভাবে জুনিয়ররা হুমকি দেবে, ভাবতে পারিনি। আজকে আরিফের নেতৃত্বে পাঁচ-ছয়জন ছেলে এসে কক্ষে একজনকে উঠিয়ে দিয়ে গেছে।’

জানতে চাইলে আরিফ বলেন, ‘রুনু ভাইয়ের মাধ্যমে তাকে হলে ওঠানো হয়েছে। রুনু ভাই, জয়ন্ত ভাইয়ের কাছে পাঠাইছে। যেহেতু এই হলের দায়িত্বে জয়ন্ত ভাই আছে, দেখাশোনার সব কিছু। তাই জয়ন্ত ভাইয়ের মাধ্যমে তাকে হলে ওঠানো হয়েছে।’

মাদার বখশ হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত রায় বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ওই ছেলে ছাত্রলীগের রাজনীতি করছে। আমরা জানতে পেরেছি ওই কক্ষ কিছুদিনের মধ্যেই খালি হবে। তার থাকার সমস্যা দেখে রুনু ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে ওই কক্ষে তাকে দেওয়া হয়েছে। তবে সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়ে হল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশটি মিথ্যা।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘আমাদের কাছে হলে ওঠার সুপারিশের জন্য অনেকেই আসে। আমাদের কাছে ছাত্রলীগের কেউ এলে আমরা ওই হলের নেতৃবৃন্দকে বলি। কে, কাকে, কোন হলের নেতৃবৃন্দ নিয়ে হলে উঠিয়েছে সেটা আমি জানি না। তবে খোঁজ নিয়ে আমি বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করব।’

মাদার বখশ হলের প্রাধ্যক্ষ শামীম হোসেন বলেন, ‘গতকাল আমার এক আত্মীয় মারা গেছেন। তাই রাতে হলে যেতে পারিনি। কালকে ওই শিক্ষার্থী (মেহেদী হাসান) আমার কাছে ফোন করেছিল। আমি বলেছি, যার আবাসিকতা আছে সেই ওই কক্ষে থাকবে। আমি আজকে হলে গিয়ে বিষয়টা দেখব।’

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৮:৫১ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]